ধীরে ধীরে স্পেনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে জায়গা করে নিচ্ছেন বাংলাদেশিরা। ১৯৯২-এর আগে স্পেনে প্রবাসী বাংলাদেশিদের বসবাস ছিল হাতে গোনা কয়েকজন। সে বছর বিশ্ব অলিম্পিকের আসর বসে স্পেনের বার্সেলোনায়, আর সে সুবাদে অলিম্পিক খেলার দর্শক হয়ে এশিয়ার বিভিন্ন দেশের পাশাপাশি বেশকিছু বাংলাদেশি চলে আসে স্পেনে। এরপর থেকেই মূলত স্পেনে বাংলাদেশিদের বসবাস শুরু হয়।

ইউরোপের দেশ স্পেনে ২০০০, ২০০১ এবং ২০০৫ সালে অবৈধ অভিবাসীদের বৈধ করণের ঘোষণা দেওয়ার পর ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে অসংখ্য বাংলাদেশি স্পেনে প্রবেশ করে। তখন থেকেই স্পেনে প্রবাসী বাংলাদেশিদের সংখ্যা হু হু করে বাড়তে থাকে।
বর্তমানে দেশটিতে প্রায় ৫০ হাজার বাংলাদেশির বসবাস। রাজধানী মাদ্রিদ এবং বন্দরনগরী বার্সেলোনায় বাংলাদেশিদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এ ছাড়া বড় বড় বেশ কয়েকটি শহরেও রয়েছে বাংলাদেশিদের বসবাস।
মাদ্রিদের লাভাপিয়েছকেন্দ্রিক বাংলাদেশি-অধ্যুষিত এলাকায় রয়েছে বাঙালিদের ঐক্যের বন্ধন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন। নতুন প্রজন্মের শিশু কিশোরদের বাংলা ভাষা শিক্ষায় সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে স্কুল ও মাদ্রাসা। রয়েছে মসজিদও। দেশের আমেজেই শিল্প সংস্কৃতি, রাজনীতি, ধর্মচর্চাসহ বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে মুখর থাকে এই অঞ্চল।
প্রতিটি অলিগলিতে রয়েছে বাঙালিদের ব্যবসা-বাণিজ্যের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। আবাসিক হোটেল থেকে শুরু করে বার রেস্টুরেন্ট, ট্রাভেল এজেন্সি, মানি ট্রান্সফার, গ্রোসারি এবং সুপার মার্কেট। ঘর থেকে বের হলে মন হয় এ যেন এক মিনি বাংলাদেশ। বাঙালি পাড়া বলে খ্যাত মাদ্রিদের
লাভাপিয়েছ দেখলে মনে হবে বাংলাদেশেরই হাটবাজার।
মাদ্রিদে প্রবাসী বাংলাদেশিদের আতিথেয়তার প্রশংসা ইউরোপজুড়েই। এখানে হিন্দু মুসলমান বৌদ্ধ খ্রিস্টান সবার মাঝে রয়েছে বন্ধুত্ব ভ্রাতৃত্ব ও ঐক্যের মেলবন্ধন।
প্রবাসে হাড়ভাঙা পরিশ্রমের পরে-ও তাদের পাঠানো রেমিট্যান্স যখন অগ্রণী ভূমিকা রাখছে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে, পরিবার পরিজনের ভাগ্য পরিবর্তনে, নিজ দেশ ছেড়ে সুদূর প্রবাসে থাকলেও এটাই তাদের সান্ত্বনা।
Post a Comment